softdeft

ফুলের পর্যাপ্ততা থাকলেও, নেই ক্রেতার ভিড় ! লোকসানের আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

ফুলের পর্যাপ্ততা থাকলেও, নেই ক্রেতার ভিড় ! লোকসানের আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

আজ ১৪ ফেব্রুয়ারী ভ্যালেন্টাইন ডে। এই দিনটি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছে। দিনটিকে ঘিরে যুবক-যুবতীরাসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ শাড়ি ও বিভিন্ন পোশাকে নতুন সাজে সেজে একটু কোথাও ঘুরতে যাওয়া, বন্ধুরা এক সাথে কয়েকজন মিলে আরেক বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে অলস সময় পার করে দেয়। একে অপরকে ফুল ও চকলেট উপহার দিয়ে ভালোবাসা জানাতে ব্যস্ত সময় পার করে তারা। তাছাড়া এই দিনটিতেই বসন্তের প্রথম দিন অর্থাৎ পহেলা ফাল্গুন হওয়ায় আলাদা মাত্রা যোগ হয়েছে। মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন ফুলের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, পূর্বের তুলনায় এবছর ফুল বিক্রি খুবই কম। বড় লোকসানের আশঙ্কায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এর কারণ হিসেবে করোনা ভাইরাস ও অমিক্রণের প্রভাব ক্রমাগত বৃদ্ধির আশঙ্কা ও স্কুল কলেজ বন্ধকে দায়ী করেছেন তারা।

মেহেরপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবু হানিফ জানান, করোনা ভাইরাস ও অমিক্রণের সংক্রমণ এড়াতে সরকারি নির্দেশনায় স্কুল- কলেজ বন্ধ রয়েছে ফলে বন্ধু বান্ধবীদের উপস্থিতি না থাকার কারণে এবছর ফুল কেনা হয়নি।

১৪ ফেব্রুয়ারী মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলা শহরসহ আশপাশের ফুল ব্যবসায়ীরা ফুল বিক্রির আশায় কাক ডাকা ভোর থেকে হাকডাক শুরু করেন। তবে ক্রেতা সকলের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। তবে ব্যবসায়ীরা সকলেই আশঙ্কা করছেন বড় অংকের টাকা লোকসানের। মেহেরপুর জেলা শহরের স্বর্ণালী গিফট কর্ণার এন্ড ফুল হাউস এর স্বত্বাধিকারী রাশেদ খান, টুটুল ফুল সেন্টারের টুটুল আহমেদের কথা বলে এসকল তথ্য জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, ভালোবাসা কি ? কোথা থেকে এ ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তি ? কেনই বা এই ভালোবাসা দিবস ? এমন নানা প্রশ্নের জবাবও ভিন্ন ভিন্ন। তবে সাধারণভাবে জানা গেছে, ভালোবাসা শক্তিশালী এবং ইতিবাচক মানসিক এবং মানসিক অবস্থার পরিধিকে অন্তর্ভুক্ত করে, সবচেয়ে মহৎ গুণ বা ভাল অভ্যাস, গভীরতম আন্তঃব্যক্তিক স্নেহ থেকে সহজ আনন্দ পর্যন্ত।
ভালবাসা মানে কেউ বা কিছুর সাথে গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভালবাসার মূল অর্থ হল কাউকে পছন্দ করার চেয়ে বেশি অনুভব করা। এটি এমন একটি বন্ধন যা পরস্পর ভাগ করে নেয়।
ভালোবাসাকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাগ করা যায়। যেমন আবেগধর্মী, মানবীয় অনুভূতি, নিষ্কাম, ধর্মীয়, বিভিন্ন পোষ্য প্রাণীর বা বস্তুর প্রতি অতিরিক্ত স্নেহসহ অতি আনন্দদায়ক অনুভূতিই হলো ভালোবাসা।
সাধারণ মতে, ভালোবাসাকে একটি ব্যক্তিগত অনুভূতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেটা একজন মানুষ অপর আরেকজন মানুষের প্রতি অনুভব করে। অধিকাংশ প্রচলিত ধারণায় ভালোবাসা, নিঃস্বার্থতা, স্বার্থপরতা, বন্ধুত্ব, মিলন, পরিবার এবং পারিবারিক বন্ধনের সাথে গভীরভাবে যুক্ত।
তবে প্রতি বছরের ১৪ ফেব্রয়ারিই কেন ভালোবাসা দিবস উদযাপন করা হয় এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের। প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ভালোবাসার জন্য এই দিনে মানুষের জীবন ত্যাগের ইতিহাস।
ভালোলাগা আর ভালোবাসার প্রবৃত্তি মানুষের সহজাত। কিন্তু সহজাত এই প্রবৃত্তি প্রকাশ করায় জীবনও দিতে হয়েছে অনেককে। তাই জন্মসূত্রে পাওয়া ভালোবাসা নামের সেই অব্যক্ত অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে যাদের জীবন দিতে হয়েছে তাদের মহিমান্বিত করতেই প্রতি বছরের নিদিষ্ট একটি দিনে পালন করা হয় ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ বা ভালোবাসা দিবস।
তবে প্রতি বছরের ১৪ ফেব্রয়ারিই কেন ভালোবাসা দিবস উদযাপন করা হয় এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের। প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ভালোবাসার জন্য এই দিনে মানুষের জীবন ত্যাগের ইতিহাস।
এর মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত ইতিহাসটি হচ্ছে রোমের ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের। তিনি ছিলেন মানবপ্রেমিক ও খ্রিস্টধর্ম প্রচারক। আর রোম সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস ছিলেন বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজায় বিশ্বাসী। সম্রাটের পক্ষ থেকে তাকে দেব-দেবীর পূজা করতে বলা হলে ভ্যালেন্টাইন তা অস্বীকার করায় তাকে কারারুদ্ধ করা হয়। সম্রাটের বারবার খ্রিস্টধর্ম ত্যাগের আজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করলে ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয় আদেশ লঙ্ঘনের দায়ে ভ্যালেন্টাইনকে কারারুদ্ধ করা হয়।
সেন্ট ভ্যালেন্টাইন কারারুদ্ধ হওয়ার পর যুবক-যুবতীদের অনেকেই প্রতিদিন তাকে কারাগারে দেখতে আসত এবং ফুল উপহার দিত। তারা বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক কথা বলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে উদ্দীপ্ত রাখত। এক কারারক্ষীর এক অন্ধ মেয়েও ভ্যালেন্টাইনকে দেখতে যেত। অনেকক্ষণ ধরে তারা দুজন প্রাণ খুলে কথা বলত। একসময় ভ্যালেন্টাইন তার প্রেমে পড়ে যায়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আধ্যাত্মিক চিকিৎসায় অন্ধ মেয়েটি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। ভ্যালেন্টাইনের ভালোবাসা ও তার প্রতি দেশের যুবক-যুবতীদের ভালোবাসার কথা সম্রাটের কানে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই থেকেই দিনটির শুরু। ওই দিনের শোক গাঁথায় আজকের এই ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’।
মূলত সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের স্মরণে এই দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এরপর থেকে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামটি ধীরে ধীরে মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠতে শুরু করে।
এই দিনে একজন মানুষ আরেকজনের প্রতি তার ভালবাসা প্রকাশ করতে ভালোবাসার বার্তাসহ কার্ড, ফুল বা চকলেট পাঠিয়ে থাকে। এ আয়োজনের বড় একটা অংশ হচ্ছে শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে গোলাপসহ অন্যান্য ফুল কেনা।

(Visited 17 times, 1 visits today)
Total Page Visits: 1178 - Today Page Visits: 3